ইসরাইলের পশ্চিম তীর সংযুক্তির পরিকল্পনা ও ট্রাম্পের প্রত্যাশিত সমর্থন
- By Jamini Roy --
- 12 November, 2024
ইসরাইলের উগ্রপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ঘোষণা করেছেন যে, আগামী বছরের মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে ইতিমধ্যে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করতে। বেজালেল, যিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন, একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এক পদে থেকেও পশ্চিম তীরের প্রশাসন এবং সেখানে বসতি স্থাপনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন।
এ পরিকল্পনাকে সমর্থনের জন্য বেজালেল স্মোট্রিচ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তাঁর আশা প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বেজালেল জানান, ট্রাম্পের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী মেয়াদের মতোই সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
বেজালেল আরও বলেন, ‘২০২৫ সাল হবে জুডিয়া এবং সামরিয়া অঞ্চলে ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার বছর।’ জুডিয়া এবং সামরিয়া বলতে তিনি পশ্চিম তীর অঞ্চলকে নির্দেশ করেন, যেটি ফিলিস্তিনের অংশ হলেও ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন। তার এই মন্তব্য ইসরাইলের অধিকতর সম্প্রসারণ ও ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের স্পষ্ট সংকেত দেয়।
ইসরাইলের এই উদ্যোগে ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেনেহ বলেন, ইসরাইলের এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর একটি সরাসরি আক্রমণ। ফিলিস্তিনের দাবি, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পথ আরও সংকীর্ণ করবে এবং একতরফা দখলদারিত্বের বৈধতা দেবে।
ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যেই পশ্চিম তীর সংযুক্তি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে ইসরাইলকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলতে পারে এবং ফিলিস্তিনের মিত্র দেশগুলোর সাথে দ্বন্দ্বকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের মনোভাব বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সার্বভৌমত্বের দাবি মেনে নিলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলবে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা ইসরাইল গত সাত দশকে প্রায় ৯৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দখল নিয়েছে। গাজা ও পশ্চিম তীর ছাড়া এখন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সামান্য অংশই অবশিষ্ট রয়েছে।